বাংলাদেশি মিডিয়ায় হঠাৎ বিপ্লবের কারন কী?

প্যান্ডেমিকের আগে যেখানে টিভিতে বস্তাপঁচা ক্লিশে প্রেমের কিচ্ছা কিংবা গ্রামের পটভূমিতে তৈরি হাস্যরসাত্মক নাটক মুখে বিরক্তিমিশিয়ে টিভি চ্যানেল চেঞ্জ করতে হতো, সেখানে কোভিড শেষ হতে না হতেই নতুন নতুন প্রতিভাবান নির্মাতারা বাংলাদেশের  অডিয়েন্সদের একে একে পরিচয় করিয়ে দিতে লাগলেন 'রেহানা মরিয়ম নূরে'র মতো আন্তর্জাতিক মানসম্মত সিনেমা, 'ষ' এর মতো পরাবাস্তব হরর এন্থোলজি সিরিজ, 'মহানগরে'র মতো ওটিটি সিরিজ এবং 'হাওয়া'র মতো মেইনস্ট্রিম সিনেমাকে। 


বাংলাদেশের সিনেমা/ওটিটি কন্টেন্টের এই রেভ্যুলেশনের কী কারন? এতদিন কী প্রতিভাবান ডিরেক্টররা বাংলাদেশে ছিলেন না? হুট করে তাদের জন্ম হলো কোত্থেকে?








তাদের জন্ম হয়েছে আগেই। কিন্তু মেইন্সট্রিম অডিয়েন্সের রুচির পরিবর্তন ঘটলো করোনাকালে। একঘেয়ে সময়ে নানা দেশের সিনেমা চষে বেড়িয়ে। বাংলাদেশের মেইন্সট্রিম অডিয়েন্স প্রি কোভিডে পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিলেন সাউথ ইন্ডিয়ান একশন ধুমধুমার সিনেমা এবং ইউটিউবে বেস্টফ্রেন্ড/ জাস্টফ্রেন্ড/ক্লোজফ্রেন্ড দেখে, কিন্তু করোনার সময় ঘরে বসে একের পর এক নাটক সিনেমা দেখে তারা বুঝতে পারলেন, নাটকগুলা আসলে কতোটা রিপিটিটিভ এবং ক্লিশে। দেশের গণ্ডি থেকে বেড়িয়ে বিদেশের সিনেমা দেখে দেশি অডিয়েন্স বুঝতে পারলেন, বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের নাটক সিনেমার জায়গা কোথায়। 


প্রতিভাবান এই নির্মাতারা চিরকালেই বাংলাদেশে ছিলেন, কিন্তু অডিয়েন্সের রুচির সাথে তাদের প্রতিভা খাপ খাওয়াতে পারেনি। সাহিত্যে থ্রিলার হররের মান দেখেই বোঝা যেত, বাংলাদেশের ক্রিয়েটিভ মানুষদের দ্বারা আসলে কী এচিভ করা সম্ভব। কিন্তু পর্দায় সেই কন্টেন্টগুলো তুলে ধরার সাহস কারো ছিল না। 









এই রেভ্যুলেশনের প্রতিনিধিত্ব রেহানা মরিয়ম নূর করেছে নাকি মহানগর, তা বলা মুশকিল (রেহানা মরিয়ম নূর যেহেতু মেইনস্ট্রিম সিনেমা না)। তবে যেই করে থাকুক না কেন, ধন্যবাদ আপনাদের-মেইন্সট্রিম অডিয়েন্সদের, যাদের কল্যানে ফিল্ম ডিরেকশনের দুর্দান্ত মেধা নিয়েও ঘাপটি মেরে বসে থাকতে হচ্ছিল যাদের, তাদেরকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।

Comments